সর্বশেষ :
বিয়ানীবাজারে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪ তম শাহাদাত বার্ষিকী পালন চাঁদাবাজিসহ একাধিক অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক রাজিব শোকজ দাঁড়িপাল্লা প্রতীকসহ জামায়াতের নিবন্ধন ফিরিয়ে দিচ্ছে ইসি সিলেটে দলীয় সভায় নেতাদের বাকবিতন্ডা ও ‘কল-কাণ্ডে’র ঘটনায় বিএনপির দুই তদন্ত কমিটি নবীগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারন করছে, কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত ভারত থেকে ‘পুশ ইন’ ঠেকানো সম্ভব নয়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা শাকিবের নায়িকা হিসেবে সাবিলা নূরকে নিয়ে কে কী লিখছেন স্থায়ী কমিটির বৈঠক : ডিসেম্বরে নির্বাচন আদায়ে সমমনা দলগুলোকে নিয়ে মাঠে থাকবে বিএনপি সরকারকে শেষ বার্তা দিলেন বিএনপি নেতা ইশরাক প্রেমিকা নিয়ে পুত্রের বিলাসী ভ্রমণ, বিতর্কের জেরে মঙ্গোলিয়ার প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগ
মহাসড়কে জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পশুর হাট! ২০০ জনের নামে মামলা

মহাসড়কে জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে পশুর হাট! ২০০ জনের নামে মামলা

এম,এ আহমদ আজাদ, নবীগঞ্জ
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক সংলগ্ন হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের জনতার বাজারে পশুরহাট বন্ধে প্রশাসনের মাইকিং ও লিখিতভাবে একাধিকবার নিষেধাজ্ঞা ও কঠোর নির্দেশনার পরও শনিবার (৩১ মে) হাট বসানো ও দায়িত্ব পালনকারী এক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর সাথে তর্ক বির্তক ও ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এনিয়ে গতকাল রবিবার সকালে জনতার বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকসহ ৩৮ জনের নাম উল্লেখ করে ২০০ জনের বিরুদ্ধে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামলা দায়ের করেছেন। কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি ও কোন ইজারা ছাড়া বাজার বসানো নিয়ে গত ৬ মাস ধরে প্রশাসন ও বাজার কমিটির মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিলো। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ঢাকা সিলেট মহাসড়কের পার্শ্বে জনতার বাজার পশুরহাট বসানোর জন্য দুইদিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পাল্টাপল্টি পোষ্ট ও এলাকার জন সাধারনের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে নানা আলোচনা ও চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে।
ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক পাশেই নবীগঞ্জ উপজেলার গজনাইপুর ইউনিয়নের জনতার বাজার গরুর হাট প্রতি শনিবার নিয়মিতভাবে বসছে বিশাল পশুর হাট। প্রতি হাটে ২০/২৫ হাজা গরু উঠছে, বিক্রি হচ্ছে ৮/১০ হাজার গরু।নির্ধারিত জায়গায় গরু জায়গা সংকুলান না হওয়াতে অতিরিক্ত গরু রাখা হয়। প্রায় ১০ একর জায়গা নিয়ে গরুর হাটটি বসে। ৫০ জনের মতো স্বেচ্ছাসেবক কাজ করেন বাজারে আইন শৃংখলার রক্ষার জন্য। তাদেরকে জন প্রতি দুই হাজার টাকা দেয়া প্রতি বাজারে ও নেতা কর্মীর চা নাস্তা বাবত ২০/২৫ হাজার টাকা ব্যয় হয় বলে জানান বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক।

একটি সূত্রে জানা যায়, জনতার বাজারে প্রতি হাটে প্রত্যয়ন ফি’র নামে প্রতি হাটে ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে, যেখানে রাজনৈতিক প্রভাবশালী ব্যক্তিরা প্রত্যক্ষভাবে জড়িত। নির্দেশনা অমান্য করে- গত ১ ফেব্রুয়ারী থেকে ৩১ মে পর্যন্ত মোট ১৮ বার বসেছে জনতার বাজার পশুরহাট ।

শনিবার সকাল থেকেই হাট বন্ধে হবিগঞ্জ জেলা ও নবীগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনের পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মহাসড়ক ও বাজার এলাকার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন।

জানা যায়, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মো. ফরিদুর রহমান গত ৭ জানুয়ারি জনতার বাজার পশুরহাট অপসারণের নির্দেশ দেন। এরপর ৩১ জানুয়ারি হাট-বাজার আইন ২০২৩ এবং মহাসড়ক আইন ২০২১ অনুযায়ী জনতার বাজার পশুরহাট পুরোপুরি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সর্বশেষ, গত ২৪ মে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় সারাদেশে মহাসড়কের পাশে পশুরহাট সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

এসব সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে শুক্রবার (৩০ মে) বিকেলে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিনের নেতৃত্বে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, নবীগঞ্জ থানার ওসি এবং বিপুলসংখ্যক পুলিশ ও আনসার সদস্য জনতার বাজার এলাকায় পরিদর্শনে যান। সেখানে বাজার কমিটিকে হাট না বসানোর কঠোর নির্দেশনা প্রদান করা হয়। তবে হাট কমিটি যেকোনো পরিস্থিতিতেই হাট বসানোর ঘোষণা দিয়ে অনড় অবস্থান নেয়, ফলে স্থানীয়দের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

শনিবার (৩১ মে) সকাল থেকেই হাটে গরুবোঝাই যানবাহন আসতে থাকে। সকাল ১০টার দিকে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সন্দ্বীপ তালুকদার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহীন দেলোয়ার, রাজস্ব শাখার সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রনজিৎ চন্দ্র দাস, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ উল্লাহসহ প্রশাসনের অন্য কর্মকর্তারা জনতার বাজার এলাকায় অবস্থান নেন। এ সময় নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মো. কামরুজ্জামান, শেরপুর হাইওয়ে থানার ওসি আবু তাহের দেওয়ান, নবীগঞ্জ থানার তদন্ত ওসি দুলাল মিয়া এবং গোপলারবাজার তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ গোলাম মুর্শিদ উপস্থিত ছিলেন।

জনতার বাজারের প্রবেশপথসমূহ—পানিউমদা, আইনগাঁও, কান্দিগাঁওসহ বিভিন্ন স্থানে গরুবোঝাই ট্রাক ও পিকআপ ভ্যান আটকে বাজারে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়। তবে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সন্দ্বীপ তালুকদার জনতার বাজারে একটি গরুবোঝাই পিকআপ ভ্যান বাজারে প্রবেশে আটকে দিলে বাজার কমিটির সদস্য ও স্বেচ্ছাসেবকরা তাকে লক্ষ্য করে উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং তাকে মারতে তেড়ে আসেন। একপর্যায়ে ধাক্কাধাক্কির ঘটনাও ঘটে বলে অভিযোগ ওঠে। এদিকে প্রতি হাটে ১০/১৫ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করা হচ্ছে। বাজার কমিটি বলছে গত বছর ৯১ লাখ টাকা কালেকশন করে সরকারী ফান্ডে জমা করা হয়েছে।বর্তমানে কালেকশনের টাকা স্বেচ্ছাসেবকদের দিয়ে অতিরিক্ত টাকা স্থানীয় মসজিদের ফান্ডে জমা হচ্ছে বলে জানান।

উপজেলা নির্বাহী অফিস সুত্রে জানা গেছে, এবার জানুয়ারি থেকে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকারীভাবে কোন কালেকশন করেননি। বর্তমান বাজার কমিটি কালেকশন করে তারা তাদের মতো ব্যয় করছেন। হাইকোটের রিট ও রুলের কপি ইতিমধ্যে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পৌছেছে বলে জানান। জনতার বাজারে কে টাকা সেটা জানেনা উপজেলা নির্বাহী অফিস।

এনিয়ে এলাকায় নানা রকম ধুম্রজাল রয়েছে।হবিগঞ্জ জেলার সবচেয়ে বড় গরুর হাটটি নিয়ে একটি পরিস্কার নির্দেশনা আসা দরকার মনে করেন সচেতন মহল।
সম্প্রতি মহাসড়কের পাশে এই পশুর হাট না বসানোর জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলে সেটির বিরুদ্ধে বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী তোফায়েল আহমদ হাইকোর্টে রিট করেন এর আদালত হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসনের নিষেধাঙ্গা স্থগিত করে রোল জারি করে কেন বাজার স্থগিতের আদেশ দেয়া হলো ব্যাখ্যা করার জন্য। এই রিট দায়েরর পর থেকে বাজারে কালেকশনের কোন কাজে প্রশাসন অংশ নিচ্ছে না।আইনের মারপ্যাচে এই হাট বন্ধ হয়নি, জনতার বাজার ঘিরে গড়ে উঠেছে কোটি টাকার বাণিজ্য। ‘প্রত্যায়ন’ নামে বিক্রেতাদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা আদায় করা হচ্ছে কোনো ধরনের সরকারি অনুমোদন ছাড়াই। অভিযোগ রয়েছে, এই অবৈধ কার্যক্রমের পেছনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি এবং জামায়াতের প্রভাবশালী একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। দিনার পুর এলাকার তিনটি ইউনিয়নের লোকজন কে দিয়ে বাজার পরিচালনা কমিটি করা হয়েছে। এ কমিটির মধ্যে সব দলের মানুষ রয়েছে।

সুত্র জানায়, হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. মো. ফরিদুর রহমান ৭ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জনতার বাজার পশুর হাট অপসারণে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে লিখিত নির্দেশ দেন। এরপর ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখ থেকে হাট পরিচালনা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। সেখানে বলা হয়, কেউ যদি সরকারি অনুমতি ছাড়া হাট পরিচালনা করে বা সহযোগিতা করে, তবে তা হাট-বাজার আইন ২০২৩ ও মহাসড়ক আইন ২০২১ অনুযায়ী দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেওয়া হবে। তবে বাস্তবে এই নির্দেশনাগুলো কার্যকর হয়নি।

এর নেপথ্যে রয়েছে হাইকোটের রুল নিশি নিয়ে জটিলতা। প্রশাসনের নিস্ক্রিয়তা ও নীরবতার সুযোগ নিয়ে জনতার বাজার পরিচালনা কমিটি গত ৫ মাসে অন্তত ১৭ বার পশুর হাট বসিয়েছে। এই গরুর হাটটি একদম মহাসড়কের পাশে হওয়ার সারাদেশে হাকডাক রয়েছে। প্রতি বাজারে ২০/২৫ হাজার গরু এখানে আসে। সারাদেশের গরু ব্যবসায়ীরা বাজারে গরু নিয়ে আসেন। একদিন আগেই বাজার জমে যায়। আগে সাপ্তাহে দুইদিন শনিবার ও সোমবার বাজার বসলেও এখন সাপ্তাহে শুধু শনিবার বাজার বসে।

প্রত্যেকবারই গরু-ছাগল বিক্রয়ের সময় ‘প্রত্যয়ন’ নামে প্রতি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ১,০০০ থেকে ২০০০ টাকা পর্যন্ত আদায় করা হচ্ছে। প্রতি হাটে আদায় হচ্ছে আনুমানিক ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা। স্থানীয় সূত্র বলছে, এ পর্যন্ত প্রায় কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, এই হাট পরিচালনায় সরাসরি জড়িত রয়েছেন দিনারপুর জনতার বাজার পরিচালনা কমিটির সদ্য মনোনীত সভাপতি ও গজনাইপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি যুদ্ধাপরাধের মামলায় জেলকাটা সাবেক চেয়ারম্যান আবুল খায়ের গোলাপ, সহ সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নুর উদ্দিন বীর প্রতিক, বাজারের সাধারণ সম্পাদক রয়েছেন কাজী তোফায়েল আহমদ, গজনাইপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি শফিউল আলম বজলু, সহসভাপতি কাওছার আহমদ, সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের কায়েদ, গজনাইপুর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সহসভাপতি ও ইউপি সদস্য জাহেদ আহমদ এবং নজরুল ইসলামসহ সংঘবদ্ধ একটি প্রভাবশালী মহল। জেলা প্রশাসনের নিষেধাঙ্গা ও হাইকোটের রুলনিশি মারপ্যাচে হাট বসিয়ে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায় করছেন বলে স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন।

নরসিংদী আসা পশু বিক্রেতারা রাহিম আলী বলেন, হাটে গরু বিক্রির সময় বাধ্যতামূলকভাবে প্রত্যায়ন বাবদ অর্থ আদায় করা হয়। এসব অর্থের কোনো রিসিট দেয়া হচ্ছে না। প্রদানকৃত প্রত্যয়ন গুলোর কোনো সরকারি ভিত্তি নেই। এতে করে আমরা সাধারণ ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত নানা রকম প্রতারণার শিকার হচ্ছি।

স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা বলছেন, হাটটি যেহেতু অনুমোদনহীন, তাই কোনো প্রত্যয়নপত্র বা রশিদের সুযোগ নেই। অবৈধভাবে পরিচালিত হাট থেকে অর্থ আদায় সম্পূর্ণ বেআইনি ও প্রতারণামূলক। প্রশাসনের এত স্পষ্ট নির্দেশনার পরও হাট বসায় এবং অর্থ আদায়ে কোনো ধরনের বাধা না আসায় তারা প্রশাসনের নিরবতা ও নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনের নীরবতা এই অবৈধ বাণিজ্যক বাজারটি করতে উৎসাহিত করছে।যদিও আইনের মারপ্যাচ রয়েছে তবুও প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো উচিৎ।

সব মিলিয়ে জনতার বাজার পশুর হাট এখন প্রশাসনিক জটিলতা ও হাইকোর্টের রুল নিশির নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষায়। এখন এই বাজারটি রাজনৈতিক একটি মহলের কোটি টাকার অর্থ বাণিজ্যের কেন্দ্রবিন্দুতে দাঁড়িয়ে আছে। এর থেকে উত্তরণের একমাত্র পথ প্রশাসনের পদক্ষেপ জরুরি, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা।

জনতার বাজার পরিচালনা কমিটির সাধারন সম্পাদক কাজী তোফায়েল আহমদ বলেন,জনতার বাজার এখন আমাদের মাধ্যমে পরিচালনা করা হয়। হাইকোর্টের রুল নিশি জারির পরে আমরা পরিচালনা করছি। এর আগে উপজেলা নির্বাহী অফিস খাস কালেকশন করতো। গতবছর তারা ৯১ লাখ টাকা সরকারী খোসাগারে জমা করেছে। এবার হাই কোর্টে আমি বাদী হয়ে তাদের উপর রুলনিশি জারির আবেদন করি। হাইকোর্ট জেলা প্রশাসনের নিষেধাঙ্গা স্থগিত করে রোল জারি করেছেন কেন নিষেধাঙ্গা দেয়া হলো জবাব দেয়ার জন্য। এছাড়া বাজার পরিচালনার জন্য ৫০ জনের মতো স্বেচ্ছাসেবক কাজ করেন বাজারে আইন শৃংখলার রক্ষার জন্য। তাদেরকে জন প্রতি দুই হাজার টাকা দেয়া প্রতি বাজারে ও নেতা কর্মীর চা নাস্তা বাবত ২০/২৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়। বাজারের কালেকশন কত টাকা হয় এমন প্রশ্নে তিনি বলেন লাখ দেড় লাখ টাকা আদায় হয়। স্বেচ্ছাসেবকদের দিয়ে ও চা নাস্তা খেয়ে যে টাকা অতিরিক্ত থাকে সেটা মসজিদের ফান্ডে জমা করি। তিনি মসজিদের ফান্ডে জমার রিসিট দেখান। তিনি বলেন তারা বাজার বসাননি, জনগন তারা বাজার বসিয়েছে। মামলায় আমাদের আসামি করা হয়েছে হয়রানি করার জন্য। আমাদের বাজারে কোন গন্ডগোল হয়নি এটি সাজানো মামলা।

নবীগঞ্জ থানার ওসি মোঃ কামরুজ্জামান জানান, অবৈধ গরুর হাটে প্রশাসনের সাথে খারাপ ব্যবহারের জন্য ৩৮ জনের নামে নবীগঞ্জ থানায় মামলা রের্কড হয়েছে। আসামি গ্রেফতারের জন্য চেষ্টা চলছে।

নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন বলেন, “জনতার বাজারে হাট না বসাতে বারবার নোটিশ, মাইকিং ও সরেজমিনে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সবকিছু অমান্য করে হাট বসানো হয়েছে। একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও ধস্তাধস্তির ঘটনাও ঘটেছে। আমরা বিষয়টি নিয়ে আমরা বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ ৩৮ জনের নামে নবীগঞ্জ থানায় মামলা করেছি ” তিনি বলেন বিগত কয়েক মাসে জোর পূর্বক বাজার বসিয়ে কয়েক কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে। তিনি জানান মামলা বাদী করা হয়েছে পানিউমদা ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা শাহ তোফাজ্জল হোসেন।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন আরও বলেন, “আমাদের পক্ষ থেকে গত জানুয়ারি মাসে জেলা প্রশাসক যখন নিষেধাঙ্গা দেন তখন থেকেই খাস কালেকশন করা হচ্ছে না। এরপরও কেউ যদি রশিদের মাধ্যমে অর্থ আদায় করে থাকে, তা আইনগতভাবে দণ্ডনীয় অপরাধ।” তিনি বলেন আমি হাইকোর্টের রুল নিশির একটি কাগজ পেয়েছি সেটি যথারিতি প্রক্রিয়া কাজ চলছে। এর ম্যারপেচে কে জনতার বাজার থেকে টাকা তুলছে সেটা আমরা জানিনা।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff